আমার দ্বিতীয় বাড়ী
আজ সকালে সাংবাদিক দাদার ফেসবুক পোস্ট ও কলেজ স্ট্রীটের জলছবি প্রায় ২৫-২৬ বছরের আগের পুরোনো স্মৃতি গুলো মনে করিয়ে দেয়।
আজ সকালে ছবির অ্যালবাম নিয়ে আমিও চলে গেলাম, আমার পুরানো দিনের সেই লালবাড়ীতে..
সাথে সেই কলেজ স্কোয়ার.....
আমাদের বাড়ী
"এই হোষ্টেল আমাদের বাড়ী, এখানে রাজনীতির কথা নয়!ওয়ার্ড চারে অবশ্য এসব কথা খাটে না!" পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের প্রেসীডেন্সির হিমুদার বক্তব্য।তপন মাইতি,সন্দীপ ঘোষ গোয়েঙ্কার রমরমা চার নম্বরে। আমি মৌলানা আজাদ কলেজের ছাত্র, মেদিনীপুর জেলার ছেলে। সুতরাং আমিও লাল ওরফে SFI.
১৯৯৩, পূজার আগে দুচার দিন থেকে ছুটি তে বাড়ী চলে এলাম।এরপর থেকে শহরকে দেখার পালা, বোঝার পালা, দারিদ্র্যর অভিশাপ কে দূরে সরানোর পালা। অভাবের থেকে অভাববোধ আরও বেশী ভয়ংকর। জয়েন্ট ও কলেজের দু নৌকায় পা দিয়ে চলতে গিয়ে পড়াশোনার অবস্থা সুপার ফাস্ট লেখা লোকাল বাস। বাংলা মাধ্যম থেকে ইংরেজী তে পড়াশোনা, কলেজের পরিবেশ ও ব্যাচমেটদের শোঅফে আমার তথৈবচ অবস্থা,না ঘরকা না ঘাটকা।আত্মসম্মান ও বাড়ীর কথা ভেবে জটীল কলকাতা কে নিজের মতো করে সাজিয়ে নিলাম। পরীক্ষা তে ড্রপ করার ভাইরাসের আক্রান্ত হবার ঘটনা, টিউশন পড়িয়ে হাতে পয়সা, হোষ্টেলের ভোটে G.S নির্বাচিত হওয়া, ঘটনা বহুল ১৯৯৫!১৯৯৩ সালে SFI,এখন SFI বিরোধী।আসলে ২+২=৪, সর্বদা এই হিসেব মেলে না। শহর ও গ্রামের মিশেলে সুনন্দদা(ওয়ার্ড-১),ইন্দ্রনীল দা(ওয়ার্ড-৫) র পরামর্শে ভুল গুলোকে বরুন বাবুর সহযোগিতা তে ঠিক করার আপ্রাণ চেষ্টা। সুদীপ্ত,ইন্দ্রনীল, প্রসূন,রূপক,শৈবাল, সৌরভ, কার্তিক, সকলের সহযোগিতা অবশ্যই ছিল। সকল কলেজের হোস্টেলে ভর্তির সরলীকরণ, রাগিং ভীতি কাটানো, মেসে ভালো খাবার, টেলিফোন ও টেলিভিশনের উন্নয়ন, টেক্সট ও গল্পের বই র লাইব্রেরী, যুগোল,ভূতো, হরে রামের চাকরির পার্মানেন্ট, মাঠের সংস্কার এবং ভলি, ক্রিকেট ও ফুটবল টুর্নামেন্ট ও ভালো প্রাইজ, সরস্বতী পূজা ও সুন্দর রিইউনিয়ন ও ফ্রেসারস এসব করতে গিয়ে পড়াশোনা থেকে আলোকবর্ষ দূরে সরে যাচ্ছিলাম। ফলস্বরূপ আরও একটি বছর গেল। অবশেষে ১৯৯৭এ গ্রাজুয়েট ও ১৯৯৮এ প্রেসিডেন্সি কলেজে এম.এস.সি ভর্তি। এরমাঝে বেনারস হিন্দু ইউনিভার্সিটিতে এম.এস.ভরতির সুযোগ হাতছাড়া ও হিন্দু হোষ্টেল ছেড়ে সুইস পার্ক,রবীন্দ্রসরোবর এর মেসে থাকার অভিজ্ঞতার স্বাদ নেওয়া হয়েছে।
এসময় ছাত্র নেতা। পড়াশোনা কম, নেতা নেতা ভাব বেশী। পৃথিবী পরিবর্তনের স্বপ্ন। গ্রামের লোকের কাছে "রাজু বন গ্যায়া জেন্টেলম্যান"! অভিজ্ঞ লোকের কাছে "বোকারা স্বপ্ন দেখে এই মুহূর্তে"!
এটা ছিল হিন্দু হোষ্টেল এপিসোড ওয়ান।এসবে আমার গ্রামের অগ্রজ, আমার সম্পর্কে দাদু রমাপ্রসাদ পালের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ স্নেহ ছিল। এসকল ছবি ও স্মৃতি যে ক্যামেরাতে তোলা,তা ওনার কাছ থেকে পাওয়া।
সোনালী দিনের কিছু ছবি .....
*মৌলানা আজাদ কলেজের কিছু স্মৃতি
*হোষ্টেলের আড্ডার মুহূর্তে....
*ফ্রেশারস ওয়েলকাম....
*সরস্বতী পূজা....
*খেলার মাঠে....
*বিদায়ী সংবর্ধনা অনুষ্ঠান....
Comments
Post a Comment